ক্যাট'স আই
কালী তিক্ষ্ণ চোখে দেখছে। ওর বাচ্চা টাকে নিয়ে হুলোটা চলে গেলো। মেরে ফেলবে,খাবে। কালীর বাঁট টনটন করে। বাকিগুলোকে কয়েকদিন বেশি বেশি করে দিতে হবে মাই। হুলো আবার উঠবে। আবার নেবে ছাদের ঘরে। এবার খুব সামলে সামলে রেখেছিলো। তবুও হলো না।
এই গল্পের সবথেকে দূর্বল অংশ হলো, পৌনঃপুনিকতা। এমন কি, হুলো কালীর সন্তান হলেও। বোরিং।
একাদশ ঘরে কেতু বসে।খরচ বেলাগাম।ক্যাট'স আই দিয়েছিলো গণেশ। পরতে পারেনি।সবসময় মনে হতো কেউ তাকিয়ে আছে। অহেতুক খরচ করে ফেলে। ই এম আই- লোন। মাঝে মাঝে শিরদাঁড়াটা টনটন করে।
কালুর বাচ্চাগুলোকে আজ একটা স্যান্ট্রো চাপা দিয়েছে। পেটের ওপর দিয়ে চাকা গেছে। পুঁটিমাছের পেট টিপলে যেমন নাড়িভুঁড়ি বেড়িয়ে যায় সেরকম বেড়িয়ে গেছে। পাড়ার লোক কর্পোরেশনের গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছে। কেউ কেউ বিধান দিলো, কালু পাগোল হয়ে যেতে পারে শোকে।
শিয়ালদা ব্রিজের নীচ থেকে সস্তার ব্রা কিনেছে। লাল। আর সিগারেটের খুচরোর বদলে কন্ডোম নিয়েছে। আজ ছাদের ঘরে নেবে। দুপুরবেলা। ছাদের ঘরের দেওয়ালে একটা পুরোনো ঘুড়ি লাগানো।
ওর মনে হয় ইদানীং সবসময় একটা চোখ দরজার ফুটোতে থাকে। কেউ জানে দেখছে সব। সব জানে। ধরা পরেই গেছে তার কাছে। খালি সবাই জানবার অপেক্ষা। ওষুধ টা খেলে বাচ্চা নষ্ট হয়ে যায়। খাবে কিনা ভাবছে। এখনো কেউ জানে না। খালি চোখটা সব জানে। কখনো কখনো আরামও লাগে। কেউ অন্তত জানে। একা একা সবটা সামলানো সহজ না। চোখটা যেনো ভাগ নিচ্ছে।
বাপির গলার মালাটা শুকিয়ে গেছে। ছবিটার সামনে ধুপের ছাই আর না পোড়া কাঠি গুলো। বাপির সাথে রীনা মাসির সম্পর্ক ছিলো। মা অসুস্থ হয়ে যাওয়ার পর থেকে। একদিন দুপুরে দেখেছিলো, রীনা মাসি বাপির নীচে। রীনা মাসির ঘরমোছা কালো কালো হাত টা চাদর খামছে। রীনা মাসি তারপর থেকেই সুন্দর করে ভাত বেড়ে দিতো।
কালীকে হুলো নিতে এসেছিলো। কালী এই প্রথম হুলো কে তাড়িয়ে দিতে পেরেছে। হুলো মনে হয় বাঁটের দুধ খেতে এসেছিলো। বয়স হয়েছে। তবুও মা এর তো। কি জানি। কালী ভেবেছিলো হুলো নিতে এসেছে। কালী এমনিতে সম্পর্ক নিয়ে ভাবে না। কিন্তু হুলোর হিংসার জেনেসিসটা জানে বোধহয়। পাশের বাড়ির জানলা বেয়ে নিউজ চ্যানেলের পরিপাটি মেয়েটা বলছে, আজ কাশ্মীরে কজন নিরীহ মরলো। সস্তার ব্রা টা ঘুড়ির মত লটকে মেঝেতে। এখনো সেই চোখটা দরজার ফুটোতে। ধরা পরে যাচ্ছে। রীনা মাসি হয়তো আজ বাপির মালা পালটে দেবে। মা হয়তো ঘুমাচ্ছে কিনবা একটু বেশি জোরেই টিভি দেখছে। রীনা মাসির মধ্যে কোন অহংকার দেখেনি। বরং একটা মায়া দেখেছিলো সেই দুপুরে। আর স্থির ভাবে, ক্যাট'স আইটা এই সব কিছু দেখছে কারোর একাদশতম ঘর থেকে।
ঈশ্বরের জননতন্ত্রী, বিদেশি শব্দ এবং একটা রক্তখেকো ন্যাপলা
১।
এই বিশ্বাস হয় -
ঈশ্বর আছেন কণায় কণায়
আমাদের ক্লাস সিক্সের ব্যাকরণ বই
সমস্ত সিগারেট কাউন্টার
ভুখা পেট
অফ্রিকা
জলবায়ু
নিভন্ত উনুন
তীব্র বর্ণবিদ্বেষ
অমৃতা গগণের টোলে
ভেনিসের জল। ইরাকের যুদ্ধ। সংবিধান। ছাপাখানা। জিরো জিরো সেভেন। ভ্লাদিমি পুতিন। হীনস্কন্ধ সময়।
এমনকি টুম্পা চাকির প্রথম খাওয়া ধর্ষণেও
২।
“shouting ‘oh god!' at bed isn't equivalent to a prayer"
ক. হরেকৃষ্ণ বলতো একটি উত্তর কোলকাতার টিঁয়া
খ. তিনি ছেলের নাম রেখেছিলেন শ্যাম। শ্যাম চোদ্দবছর বয়সে বাথরুমের ফুটো দিয়ে ভিজে মাকে দেখে হাত মেরেছিলো।
গ. প্রত্যুষা ঋতুমতী হয়েও ঠাকুর ছুঁয়ে ফেলেছে
ঈশ্বর আমার বিশ্বাস পুড়ছে
ওদিকে দৃশ্য তখনও কালো। পর্দা ওঠে নি। আমরা হাত চালান করে দিয়েছি পবিত্র বুকে বুকে। ঘেঁটেছি।
৩।
তিনি বললেন, এই মহাবিশ্ব এখনো ঈশ্বরের পেটের জলে ভাসছে। ঈশ্বরের থেকে পুষ্টি পাচ্ছে এখনো এই মহাবিশ্ব। পাপ যত বাড়ছে, প্রসব সময় ঘনাচ্ছে। প্রসব মানে ধ্বংস।
গোঁসাই বলে, এই মহাবিশ্ব কি মেয়েছেলে নাকি?
তিনি ঠোঁট চেপে হাসেন
৪।
পুরো শূন্য থেকে বানিয়ে তোলা এইসব কিছু
আমি তো ভাবি
এইসব কিছুই বিয়োগান্ত
এই যে আমাদের কোথাও না কোথাও আত্মীয়তা কমছে
কফিহাউসে ধান্দাবাজি আড্ডা বসছে অবশ্য
সেসবকে কতটা আত্মীয়তা বলা যায় তা জানা যায় নি
তবুও এই যে আমরা ছড়াচ্ছি
নিকটতম নক্ষত্রের টান কমছে আমাদের ওপর
আমাদের রাঙতা
আমাদের খয়ের আরেকটু কম লাল
বীভৎস স্থির এই দেহগুলো
যারা ভৌতিক কণা ঠাসা রাষ্ট্রীয় বুলেট খেয়ে
থেমে গেছে
যাদের লাশ শনাক্ত করতে বাড়ির লোকজন আসছে না
ফালতু ঝুট ঝামেলা
তাদের মৃত্যুর বুকে
(যা দুটো ফুটোওয়ালা)
দু এক টুকরো মিনি ব্ল্যাকহোল পুড়ে দেবে
বাঞ্চোৎ ঈশ্বর ও কবি?
৫।
হরিতকি রোদ্দুরে আমি অবাক অবাক মৃত্যু গল্প নিয়ে বসি
দেখি ঈশ্বরের বাওয়াল
কে একটা মরে গেছে এমনি এমনি
ঘুমাতে ঘুমাতে
দপ করে আগুন লেগে
দেখি
কে একটা লাফ মেরেছে ছাদ থেকে বড় কুকুরের ভয়ে
কে একটা হিস্যা পায়নি বলে মায়ের প্রেমিককে খুন করে দিয়েছে
ঈশ্বরের দিকে ঘন বাহ ছুঁড়ে দি
ভালু
ভালু
আমরা সবাই জড়ো হয়েছিলাম একটা সর্ষেক্ষেতে। আসলে আগের বছর এখানে সর্ষেচাষ হয়েছিলো। তারপর একবছর আর কিছুই হয়নি। তাও নামটা থেকেই গেছে। আম্মু আর দিভাইকে পাচ্ছিলাম না। ওদের নাকি জঙ্গলের দিকে নিয়ে গেছে। রশিদ এর প্যান্টের দড়িটে খুলে যাচ্ছে। ওর আম্মুকেও নিয়ে গেছে। রশিদ কাঁদছিলো বোকার মত। আব্বু তো বল্লো, একটু বাদেই আম্মু আর দিভাই চলে আসবে। রশিদের আম্মুও। আজ সাত নম্বর রোজা। আব্বুর রোজা ভেঙে গেছে। একবার খারাপ কথা বলেছে আব্বু। বাড়িতে খারাপ কথা বলে না আব্বু। রশিদের এর বাবার মত মাকে মারেও না। রশিদ একবার রাতে ওর আব্বু আম্মু কে কিসব করতে দেখেছিলো। আমার আব্বু আম্মু কেন ওসব করে না? আমি কেন দেখতে পাই না? আম্মুরা এখনো ফিরছে না জঙ্গল থেকে। ওদিক থেকে পচা পচা গন্ধ আসছে। কুকুর পচলে যেমন গন্ধ আসে। আম্মুরা জঙ্গলে কি করছে? ইসস। ওদের সাথে গেলে ভালো হতো। রশিদ আর আমি একবার লুকিয়ে জঙ্গলে গেছিলাম। তারপর আর যাওয়া হয়নি। ওই জঙ্গলে এখন কিরকম সব লোক থাকে। আব্বু বলে, ওরা জওয়ান। ওদের বন্দুক থাকে। রশিদ একবার ওদের কাছে বন্দুক চেয়েছিলো। একটা লোক বলেছিলো, আগে তোর আম্মি কে নিয়ে আয়। রশিদের আম্মি সেদিন রশিদকে খুব মেরেছিলো। কি হতো একবার গিয়ে বললে? বেশ মজা হতো।
আম্মুরা ফিরে এসেছে। সবাই খুব কাঁদছে। ইসস আম্মির গলায় কেমন কালশিটে। আম্মু কাঁদছে। রশিদের মা পেট চেপে মাটিতে শুয়ে। সবাই এসেছে, দিভাই খালি আসে নি। আব্বু ওই লোকগুলোর কাছে গিয়ে কিসব বলছে। ওরা হাসছে। দিভাই কি জঙ্গলে হারিয়ে গেছে? ভালু আছে নাকি ওই জঙ্গলে। দিভাই কে কি ভালু...
দিভাই এর সাথে সাহিন ভাইয়ের শাদি হওয়ার কথা ছিল। দিভাই ছাড়া গ্রামের সবাই ফিরে এসেছে। জঙ্গলের দিক থেকে খুব পচা পচা গন্ধ আসছে। অনেকগুলো কুকুর একসাথে মরে গেলে যেমন গন্ধ আসে আর কি... দিভাই এর একটা ভালু আছে। সাহিন ভাই দিয়েছিলো। লাল রঙের। সেটা জড়িয়ে আজ ঘুমালে নিশ্চয় দিভাই মারবে না।
ডাকনামে সমুদ্র
Ocean in the PenName
Comments
Post a Comment