প্রাকৃত আ-গলে লেখা কবিতারা: পর্ব ১
(উৎসর্গঃ নাদিয়া ইসলাম)
মা তারা আসলে পাখীর নাম
এবং ডেসিবেলে
কেঁপেছে চারটে দেওয়াল
ঘুলঘুলি থেকে মারহাবা
আকাশও কী দারুণ খসে গেছে,
বাতানুকূল তছনছ করে
এসেছেন তারা, ভোররাতে,
লাল আকাশের পাশে মুখ রেখে...
জিভ তার রক্তিম,
পায়ের নীচেতে বাঁধা সুরক্ষা-খনির নুপুর,
চুলের অরণ্যে আজও
চাঁদের অন্ধকার, মৃদুমন্দে পাখির আরাম,
তিনি তারা, আমি তার কোহলসন্ধান
#
আমি তার ত্রিকাল স্বপ্ন থেকে
বুনে ফেলছি রাত, তন্ত্রবিদ্যেরও আগে
সহজ-ফসলের কথা লিখছি স্নানের ঘোরে
তারা পাখী, পাখীমা তারাটির ডানা থেকে
শিখছি ভূতল-বিদ্যে আর
চরাচরে ট্রানজিস্টার
সুদূর ব-দ্বীপ থেকে অগ্ন্যুতপাতের সংবাদ...
তারা মা মুণ্ডমালা খুলে রেখে
আমাকে শোনাচ্ছেন, নৌকা ভ্রমণের শেষে
মালভূমে মেয়েরা রোজ বাজায় পিয়ানো
গাছের কোটরে কেমনে রান্নাবাটি, আর কীভাবে
বালিতে সূর্য এঁকে সময়ের ওঠানামা,
বোনা হয় শীতের পোশাক,
কেমনে বাঁধতে হয় ত্রিনয়নী-বেরা
কীভাবে হামাগুড়ি, কীভাবে হেঁই-হো
ঝাঁপিয়ে পড়ার আগে আয়না আয়না
কাজল-স্বপ্নে লাগে হকের আজান
#
আমার পাঁজর জুড়ে সারারাত
পলাশিয়া মেয়ে ও তাহার সে
পরমাপরম, সেই লাল,
আমি তার ডানায় কন্ঠ পেতেছি, আর
গাইছি, 'সময় তো থাকবে না গো মা
কেবলমাত্র কথা রবে...'
কথায় কথা কেঁপে যাচ্ছে,
চৈতন্য চক্কর দিচ্ছে গ্যালাক্সির তারানায়
#
আর ভোরবেলায় তারা মা, তারাপাখী
আমার সঙ্গে ছাদে যাচ্ছেন চরাচর দেখবেন বলে
দেয়ালা
তারপর বর্ষাতি ফেলে আসার কথা মনে পড়বে আমাদের
আর সাদা বিকেলের মাঝখান দিয়ে
চ্যাপ্টা নাকের ছেলে তোমায় দেখে
শিষ দিতে দিতে সাইকেল গড়িয়ে দেবে,
ঢাল বেয়ে পতঙ্গের রঙে, রঙের ভেতরে
বর্ষার স্প্রে, বোতলের ওপর তোমার
সবুজ নখ, মৌসম-জ্যাজ...
দূর প্যাগোডার ভেতর থেকে ভেসে আসবে স্তব,
বাবলের ওড়াউড়ি ঘেঁষে কয়েকটি
থতমত ফ্রেম, মনোমুগ্ধ অ্যাপার্চার,
এমন ছবিতে কিশোরী মানায় ভালো, আর তোমার
চুলের ভিতর দিয়ে ফোকটেল ড্রিংড্রং...
সিগারেটে, গাঁজায় আমাদের গা, পাহাড়ের
পাড়া-গাঁ চুরমার, গানের আরাম চারিদিকে...
প্রাকৃত খননে সেদিন ভোর এসে যাবে...
তারপর জঙ্গল সাফারি আর পাহাড়ি কেশর
গীটার বাজছে দ্যাখো, গাছ থেকে ঝুলে আছে কর্ড
#
এইসব ভাবি আর ঘড়ি দেখি, আর রাস্তাঘাট দেখি
আর ট্রাফিকের আলো দেখি, ফাঁকা পার্ক দেখি, রাতের শহর দেখি
শেষ মেট্রো দেখি, একা একা ঘরে ফিরে আসা দেখি
নার্সিসাস বাথরুমে ঘনঘোর দেখি আর গাঁট গুণি
কবে ভিসা পাবে তুমি আর কবে কবিতাগুলো জ্যান্ত হবে
ভাবতে ভাবতে রাত থেকে ভোর হয়ে যায়, জন্ম পেরিয়ে যায়
জন্মান্তর পেরিয়ে পেরিয়ে আবার পাহাড় আবার জঙ্গল আবার হালুম
কবে আসছো জানিও। জানিও। তারপর...
চোদ্দটি ছিদ্রের মিথিক্যাল রাত
তেরো কিংবা চোদ্দ
সংখ্যা দুলে ওঠে তাহার ছিদ্র জুড়ে
#
রাতের আগায় টলমল করে ওঠে
তাহার ছিদ্রগুলি, তাহার প্রকৃতি-বোতাম,
বোতাম কিংবা নোলক কিংবা তালাচাবি
ছিদ্রের মুখে আটকে রাখে সে, কেননা
চাবি খুলে ফেলার আগে
তাহার চাই আস্ত কবিতা
তাহার শরীরে সাজানো ছিদ্রের ভেতরে
জাগতিক যত পথ,
#
কবিতার
ফুঁ এসে, কবিতার শরীর এসে, কবিতার
রস এসে খুলে দেয়
সিংহ-দরজা, ছিদ্রগুলি
জগতের মহা যা কিছু, যা কিছু
রসের নিমিত্ত, সব, পেয়ে যায়
এবং তাহার শরীরের তেরো কিংবা চোদ্দ সংখ্যার
ছিদ্রগুলি খুলে যায় একে একে
#
হাওয়া ঢোকে, কিলবিল তারাগুলি খসে পড়ে
ছিদ্রে তাহার, নক্ষত্রের জ্বর আসে ছিদ্রের আদিম আদিমে
এবং প্লাবনের ইশারা, তাহিতির ক্যাম্ফায়ার
দাবানলে ছুটে যাওয়া নীল ঘোড়া
আফিম খেতের পাশে রাখালের বাঁশি...
#
দৃশ্যের পরিপূর্ণ যা কিছু সতেজ সব
তাহার ছিদ্রের কাছে, তেরোটি তালা খুলে
তেরোটি কবিতার ঠোঁটে, নখে, মাংসের
গভীর তন্ময়তায় তাহার ছিদ্রে
আরব্যগহীন রাত, অথবা
কামখ্যা পাহাড়, বশীকরণের গান...
তাহার ছিদ্র দিয়ে জাহান্নাম থেকে
দ্রুতগামী ট্রেন ছুটে গেছে বেহেস্তর দিকে
প্রথম আগুন কুড়িয়ে নিতে
#
আর
সে আগুন কুড়িয়ে কুড়িয়ে আমি লিখে ফেলছি
চোদ্দতম অন্তিম ছিদ্রের কথা, একদিন
ওখানেই জন্মান্তর, একদিন
ওখানেই শরীর পেয়ে গেছে নিরাকার
ব্রহ্ম, ওখানেই একদিন শরীর
খুঁজে পাবো আমি আর হল্লাজের কানে কানে
বলে দেবো, আমিও সত্য
কেননা তাহার ছিদ্র সত্য
কেননা তাহার ছিদ্র নম্বর চোদ্দের কাছে
আমার মরমীয়া, আমার মারফতি ভোর
আমার আয়নানগর আমার ছিদ্রপুরাণ
তাহার বোতামের ভিতর আয়োজন
প্রকৃতি পরম
ছিদ্রের মহামায়া, মহা-মায়া রাত
(১৯ এপ্রিল, ২০১৬, ভোর ৩টে ৩৫ মিনিট।)
বঙ্গবালা
আজ এই চিঠি সমাপন
আজ ঝিরি ব্যালকনি,
অরণ্যমুখে তুমি দুলে দুলে
চাদর বুনেছো
লক্ষ্মীর বাচ্চারা শুতে পাবে বলে,
আর অন্নভোগের শেষে
আমাদের বাচ্চারা যাতে
চাঁদ নিয়ে খেলাধুলা পারে!
আমরা তো এতদিন ঘেমেনেয়ে
শুনেছি অনেক
গোলাকার রুটি আর চাঁদের গোল্লা,
তুমি শুধু চাদর বুনেছো,
পাঠিয়েছো উনুনমঙ্গল,
ওই তো আতপের সুখে
দ্যাখো মানুষের হাঁড়ি ভরে গেছে
অন্নপূর্ণা জেগেছেন পদ্মায়,
বুড়িগঙ্গা নদীর কিনারে...
আমার স্বপ্নগুলি
আমার সকল উচ্চারণ
তোমারে লক্ষ্য ক'রে...
কালো টাকার পাওয়ার হাউজকে আড়াল করতে এবং মানুষের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা খর্ব করতেই ৫০০ ও হাজার টাকার নোট নিষিদ্ধ করেছে মোদীয় ভারত রাষ্ট্র, যা একটি ফ্যাসিবাদী পদক্ষেপ
মোদীভাই যা করেন, সেই ক্রিয়ায় দেশভক্তির দৈবভাবের গঙ্গাজল ছিটিয়ে দ্যান। আর জয় জগন্নাথ হ্যাঁ হ্যাঁ করা পাব্লিক গঙ্গা ফড়িং-এর মত মোদীয় কর্মসূচীর পিছন পিছন উড়তে থাকে। গণমানসে দেশভক্তি বা রাষ্ট্রীয় ইমোশনের আফিম মোদীর এক সাংস্কৃতিক অস্ত্র। এবং এই অস্ত্রকেই ভারতীয় অর্থনীতিতে ফ্যাসিবাদ কায়েম করার ক্ষেত্রে প্রয়োগ করেছে মোদী।
এই অস্ত্র কী রকম?
১। কালো টাকার লেনদেন থামিয়ে দেশের অর্থনীতিকে শুদ্ধ ধারায় নিয়ে যাওয়া এবং দেশের আর্থিক শ্রী বৃদ্ধি ফিরিয়ে আনা
২। টেরর ফিন্যান্স বা সন্ত্রাস লগ্নিতে আক্রমণ শানিয়ে সন্ত্রাসবাদীদের আর্থিক মেরুদণ্ডে আঘাত।
লক্ষ্যনীয়, এই দুটি ক্ষেত্রেই 'দেশভক্তি' বা রাষ্ট্রবাদের লজিকেই আবর্তিত হয়েছে মোদী ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা। আর তাতেই একাংশের আফিম খেকো অন্ধজন 'জ্বি হুজুর' রবে মোদীয় ফতোয়াকে স্বাগত জানাচ্ছে। ৫০০ ও হাজার টাকার নোট মাত্র ২-৩ ঘন্টার মধ্যে নিষিদ্ধ করার সরকারি তথা রাষ্ট্রীয় ফতোয়াকে স্বাগত জানানো হচ্ছে।
ফ্যাসিবাদ কায়েম হয় এভাবেই। ফ্যাসিবাদের সাংস্কৃতিক অস্ত্র এক ও একমাত্র রাষ্ট্রবাদ। রাষ্ট্রবাদের মধ্যেই শ্রেণী ও বর্ণের বিষয়গুলি অন্তর্ভুক্ত থাকে। হিটলার, মুসোলিনি-সহ দুনিয়ার সমস্ত ফ্যাসিস্টদের এই একটিই ছক। আর সেই ছকেই মোদী প্রথমে সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে তারপর অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে ফ্যাসিবাদ কায়েম করতে চাইছেন। এরপর তাঁর লক্ষ্য হবে রাজনৈতিক ক্ষেত্রে ফ্যাসিবাদকে স্থাপিত করে ফ্যাসিবাদের ভারতীয় বৃত্তকে সম্পূর্ণ করা। যা ইতিমধ্যেই পররাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে বা প্রতিবেশি দেশগুলির উপর আগ্রাসনের নীরিখে শুরু করে দিয়েছেন। সে ভিন্ন প্রসঙ্গ।
এবার এই নোট নিষিদ্ধ করার সঙ্গে ফ্যাসিবাদের সম্পর্কটা একটু খোলসা করে বলা যাক।
প্রথম কারণ বলা হচ্ছে কালো টাকার গতি ও সম্প্রসারণকে রুখে দেওয়া এই সিদ্ধান্ত গ্রহণের অন্যতম কারণ। ভালো কথা। আচ্ছা খুব সাধারণ একটা প্রশ্ন, কালো টাকা কি কেউ গদির তলায়, জাঙ্গিয়ার পকেটে বা ব্রেসিয়ারের ভাঁজে রেখে দ্যায়??? নাকি হুন্ডি, হাওলা হ্যানাত্যানায় সেই টাকা লগ্নিকৃত হয়ে যায় ঘরবাড়ি, গাড়ি থেকে শুরু করে মাঠঘাট, খনি, দ্বীপ ইত্যাদি খরিদ করে বেনামে তা রেখে দেওয়া হয়! ক্ষমতায় আসার আগে মোদী বিদেশ থেকে কালো টাকা ফেরত আনার কথা বলেছিলেন।বিদেশে কালো টাকা যারা রাখে তারা হয় সুইস ব্যাঙ্কে রাখে অথবা এভাবে বেনামে সম্পত্তির মধ্যে কালো টাকার রূপান্তর ঘটায় আর দেশে টাকা রাখলেও তা টাকা বা মুদ্রা আকারে থাকে না থাকে অন্য কোনো রুপান্তরিত ফর্মে। এদিকে, আরেক দল আছে যারা অনবরত ভারতীয় ব্যাঙ্কগুলির থেকে টাকা ধার নেয়, পরে সরকার তাদের কাছ থেকে প্রাপ্য পাওনা সুদ-আসল-সহ বিশাল বিশাল অঙ্কের টাকাকে ছাড় দিয়ে দ্যায়। আম্বানি, আদানি-সহ বহু বহু শিল্পপতিদের ক্ষেত্রে মোদী যা ইতিমধ্যেই করেছে।আচ্ছা 'কালো টাকা' টাকা তো বলা হয় সেই টাকাকে, যে টাকার কোনো হিসেব রাষ্ট্রের কাছে থাকে না এবং যে টাকার কর রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা পরে না। তাহলে সাধারণ মানুষের জমা দেওয়া কঅরের টাকাকে যেভাবে শিল্পপতিদের হাতে, বিত্তবানের হাতে হাতে মোদীভাই তুলে দিচ্ছেন, তাকে কি বলা যায়? স্বচ্ছ ধন? নাকি তা বিত্তবানের কাছে শাসকের ঋনের পরিশোধের অঙ্ক? কেননা, মোদী ক্ষমতায় আসার সময় এই সব বিগ ইকোনমিক্যালপাওয়ার হাউসগুলির কাছ থেকে প্রচারের জন্য, গণমাধ্যমগুলিকে কিনে নেওয়ার জন্য, পাব্লিকের মাথা খাওয়ার জন্য বিশাল অঙ্কের টাকা পকেটস্থ করেছিলেন। সেই টাকা ফেরত দিতে পাব্লিকের পকেটের করের টাকাকে তুলে দেওয়া হচ্ছে শিল্পপতিদের হাতে। তাহলে মোদীযে রাষ্ট্রীয় কোষাগারের স্বচ্ছ ধন লুঠ করছেন, এর বেলায় কি বলা হবে?
এবার আসি তাদের কথায় যারা বালিশের তলায়, আলমারিতে, জাঙ্গিয়ায় বা ব্রেসিয়ারের ভাঁজে টাকা রেখে দ্যায় তাঁদের কথায়। দেশের মধ্যবিত্ত, নিম্নমধ্যবিত্ত এবং অবশ্যই দরিদ্র জনতার অধিকাংশ মানুষ সংগঠিত কোনো অর্থনৈতিক ধারার মধ্যে নিজের জীবিকানিবার্হের সুযোগ পান না। ফলে অসংগঠিত অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় তাদের মাথা গুঁজে দিনগুজরান করতে হয়। এই কারণে বহুলাংশের মানুষ আয়কর ব্যবস্থার মধে আসার সুযোগটুকুই পায়নি। তাদের নগদ টাকা ব্যাঙ্কের বাইরেও ঘরের আলমারিতে, মানিব্যাগে, পান্টের পকেটে, জাঙ্গিয়ায়, পেটিকোটে, ব্রেসিয়ারের ভাঁজে জমানো থাকে। যেমন ধরেন আমি, সরকারি হিসেব অনুযায়ী আমি বেকার। অথচ আমি হোয়াইট কালার একটি চাকরি করি। সাংবাদিকতা। আমায় ব্যাঙ্কের মাধ্যমে মাস মাহিনা দেওয়া হয়। অথচ তার কোনো পে-স্লিপ, পি-এফ, গ্র্যাচুয়িটি ইত্যাদি দেওয়া হয়না। মোটামুটি ভ্রদ্রস্থ একটি অংকের টাকা কেবল আমায় প্রদান করা হয় আমার হাউস থেকে। যদি পে-স্লিপ না থাকে তাহলে আয়কর কীভাবে জমা পড়বে? আমার আয়ের সূত্রই তো অসংগঠিত। তাহলে আমার আয় কালা আয়? অথচ আমি সাংবাদিকতা করি, আমার পেশা একটি স্বচ্ছ পেশা। এছাড়াও আমি দেশ-বিদেশে লিখে অতিরিক্ত সামান্য কিছু আয় করি। তারও তো কোনো রাষ্ট্রীয় হিসেব নির্মাণের সুযোগ রাষ্ট্রের ছত্রছায়ায় থাকা প্রতিষ্ঠানগুলিই তৈরি করে দেয়নি। এবার আমার কথা বাদ দ্যান। আমি কালচারালি মধ্যবিত্ত না হলেও আর্থিক ক্ষেত্রে মধ্য বা নিম্নমধ্যবিত্ত। যারা নিম্নবিত্ত, যারা দোকানে কাজ করেন, বাড়িতে বাড়িতে গৃহশ্রম করেন, রাজমিস্ত্রীর কাজ করেন, দিনমজদুরি, কৃষিমজুরি করেন? তাদের আয়ের অঙ্ক আয়করমুখী না হলেও তাদের কাছে জমা থাকা অর্থের কোনো রাষ্ট্রীয় হিসাব নেই। তাহলে কি এই শ্রমজীবী, কর্মজীবী মানুষের কাছে থাকা অর্থ কালা ধন?
আসলে বিদেশে যারা কালা টাকা পাচার করেছে তাদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক মোদী একদিকে তাদের ওপর থেকে এবং নিজের দিক থেকে ফোকাস ঘোরাতে মানুষের পেটে লাথ মারার চতুর কৌশল অবলম্বন করেছেন এই নোট নিষিদ্ধ করে। দ্বিতীয়ত, সাধারণ মানূষের পকেটে আর্থিক ফ্লোকে রুখতে এবং বিগ পাওয়ার হাউজগুলির কালা ধনকে অক্ষত রাখতে চাওয়া হচ্ছে। যাতে আর্থিক বৈষম্য আরো বাড়ে। এবং আর্থিক বৈষম্য প্লাস দেশ ভক্তির আফিমে গণহিস্টিরিয়া তৈরি করে ফ্যাসিবাদ কায়েম করা হচ্ছে।
এবার আসি টেরর ফিন্যান্স প্রসঙ্গে। প্রকৃত অর্থে বৈদেশিক সন্ত্রাসবাদী শক্তির নেটওয়ার্ক মোদী বা ভারতীয় অর্থনীতির ওপর খুব কম অংশেই নির্ভরশীল। তাদের আর্থিক নেটওয়ার্ক বর্হিবিশ্বের সঙ্গে সংযুক্ত। যেমন ধরেন আইসিস। মিস্টার বাগদাদীর কি খেয়েদেয়ে কাম নাই যে ইউপি, বিহার, বঙ্গ, তামিল প্রদেশের অলিগঅলি থেকে তারা অর্থ সংগ্রহ করবে?? তাদের নিজস্ব পরিকাঠামো আছে। আছে বলেই তাদের রক্তচক্ষুতে মোদী থেকে ট্রাম্প অবধি বিচলিত। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে যে তারা হিলারী ক্লিনটনকে অর্থ সাহায্য করছে, তারা কি আর্থিক ভাবে এতটাই দৈন ভারতের গান্ধিবাবা নোট তারা সংগ্রহ করছে ভারতের অলিগলি থেকে? আসলে এটা খুবই দূর্বল জাতীয়তাবাদী ঢপ। বরং এদেশের অসংখ্য ছোট-মাঝারি রাজনৈতিক শক্তি আছে, যারা জনগনের টাকায় চলে, জনগনের মধ্যে থেকেই কাজ করে, তাদের আর্থিক পরিকাঠামোকে ভেঙে দেওয়ার জন্যে টেরর ফিন্যান্সের তত্ত্বকে বাজারে ছাড়া হচ্ছে। এ আসলে অর্থনৈতিক ফ্যাসিবাদ থেকে রাজনৈতিক ফ্যাসিবাদে উত্তরণের এক প্রয়োজনীয় ধাপ।
সুতরাং সজাগ থাকুন। বোকা হয়ে যাবেন না। আপনার প্রতিটি মৌলিক অধিকার, স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করতে শুরু করেছে ফ্যাসিস্টরা। সংগঠিত হন।